রাজশাহী অঞ্চলে পাকতে শুরু করেছে লিচু, উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা

রাজশাহী অঞ্চলে পাকতে শুরু করেছে লিচু, উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা

রাজশাহী অঞ্চলে পাকতে শুরু করেছে লিচু, উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা
রাজশাহী অঞ্চলে পাকতে শুরু করেছে লিচু, উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে গাছে গাছে লিচু পাকতে শুরু করেছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার জন্য এ বছর লিচুর উৎপাদন কম হবে বলে আশঙ্কা করছে কৃষিবিদ এবং কৃষি বিজ্ঞানীরা। গাছে এবার গুটিও কম দেখা যাচ্ছে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, গতবছর গাছে প্রচুর লিচু ধরেছিল। তাই এ বছর এমনিতেই লিচু কম ধরার কথা ছিল। এর উপরে এবার ফুল থেকে গুটি আসা পর্যন্ত নানারকম বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে পড়েছে লিচুগাছ। তাই ফলন হবে কম।

তিনি বলেন, লিচুর ফুলের পরাগায়নের সময় তাপমাত্রা কম থাকা প্রয়োজন। কিন্তু শীত শেষে হঠাৎ করে গরম পড়ে গেছে। এর কয়েকদিন পর হঠাৎ একটানা কয়েকদিন ভোরে কুয়াশা পড়েছে। ফলে পরাগায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন আবার খরা চলছে। বৃষ্টির পরিমাণ খুব কম। এতে গুটিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে লিচুর উৎপাদন এবার কম হবে। ড. আবদুল আলীম বলেন, রাজশাহী অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি লিচু হয় পাবনার ঈশ্বরদীতে। খোঁজ নিয়ে দেখলাম, সেখানেও লিচুর অবস্থা ভাল না। উৎপাদন কম হবে বলে বাজারে লিচুর দাম বেশি থাকবে।

লিচুর ফলন কম হতে পারে বলে স্বীকার করেছেন রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কেজেএম আবদুল আউয়ালও। তিনি বলেন, এবার হঠাৎ করেই শীত শেষ হয়ে গেছে। লিচুর ভাল পরাগায়নের জন্য ১২০ ঘণ্টা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও কম তাপমাত্রা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু এই সময়টা এবার পাওয়া যায়নি। গরম শুরু হয়ে গেছে। আবার গরমের মধ্যেই কুয়াশা পড়েছে। এসব বৈরি আবহাওয়ার কারণে লিচুর উৎপাদন কম হবে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলায় এ বছর ৫৩০ হেক্টর জমিতে লিচুগাছ রয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৭ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে। কিন্তু সেটি এবার পূরণ না-ও হতে পারে। এখন গাছে থাকা লিচুর গুটি যেন ঝরে না পড়ে তার জন্য চাষিদের নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

রাজশাহী মহানগরীর সবচেয়ে বেশি লিচু বাগান রয়েছে, ছোটবনগ্রাম, রায়পাড়ায়। এ সমস্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে লিচু পাকতে শুরু করেছে। তবে খরার কারণে অনেক লিচু ঝরে পড়ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। এতে তাঁরা চিন্তিত। চাষিরা জানিয়েছেন, রাজশাহী অঞ্চলে মূলত উন্নতমানের জাত হিসেবে বোম্বাই, মাদ্রাজি, কাদমি, মোজাফফরপুরী, বেদানা, কালীবাড়ি, মঙ্গলবাড়ি, চায়না-৩, বারি-১, বারি-২ ও বারি-৩ জাতের লিচু উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে বোম্পাই লিচুর আকর্ষণ বেশি। সবচেয়ে বেশি গাছ রয়েছে বোম্পাই লিচুরই। এবার বৈরি আবহাওয়ায় এই জাতের লিচুরই বেশি ক্ষতি হয়েছে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দিনও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা বাগান ঘুরে দেখেছি কীটপতঙ্গের আক্রমণ কম। তাই প্রথম দিকে লিচুতে আমের মতো রুটিন স্প্রে করা লাগেনি। কিন্তু আবহাওয়া নিয়ে সমস্যা হয়ে গেছে শুরুতে। এখন আবার খরা চলছে। কয়েকদিন আগে বৃষ্টি হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply